জগদীশচন্দ্র বসু ( বিজ্ঞানী )
জগদীশচন্দ্র বসু :
জগদীশচন্দ্র বসু জন্মগ্রহণ করেন বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে, ৩০ নভেম্বর ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে । তিনি বিশ্ববিশ্রুত পদার্থবিদ ও জীববিজ্ঞানী ছিলেন। কলকাতা স্কুলে ও কলেজে শিক্ষালাভ করে তিনি ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে গ্রাজুয়েট হন। তিনি কেমব্রিজ থেকে বিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএ এবং বি.এস.সি পাশ করেন। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রেসিডেন্সী কলেজের অধ্যাপক হন। তিনি কলেজে এডিসনের ফোনোগ্রাফী যন্ত্রে নানারকম শব্দগ্রহণ ও পরিষ্ফুটনের পরীক্ষা করেন। ৩৫ বছর বয়সে ’ বৈদ্যুতিক চুম্বক তরঙ্গ’ সম্বন্ধে গবেষণা করেন। প্রথম পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক তরঙ্গের বস্তুনিচয় সম্পর্কে স্বউদ্ভাবিত যন্ত্রের সাহায্যে অতি ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক তরঙ্গের দৃশ্য আলোকের সকল ধর্ম বর্তমান- এ তত্ব প্রচার করেন। এ সময়ে তিনি বিনা তারে বার্তা প্রেরণের পদ্ধতি আবিস্কার করেন। এসময় লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় তাকেঁ ডি.এস.সি উপাধি প্রদান করে। পরে তিনি উদ্ভিদ, ধাতু ও প্রাণীর পেশীর উপর নানা পরীক্ষা করেন এবং দেখান যে বৈদ্যুতিক, রাসয়নিক, যান্ত্রিক উত্তেজনায় ঐ তিন বিভিন্ন জাতীয় পদার্থ একইভাবে সাড়া দেয়। তাঁর রচিত ‘ Comparative Electro physiology’ গ্রন্থে এই গবেষণার কথা লিপিবদ্ধ করেন। মানুষের স্মৃতিশক্তির যান্ত্রিক নমুনা তিনিই প্রথম প্রস্তুত করেন। আধুনিক রাডার যন্ত্র, ইলেকট্রনিক কম্পিউটার প্রভৃতির সৃষ্টি অংশত এই মৌলিক চিন্তার অনুসরণ করেই সম্ভব হয়েছে। তিনি উদ্ভিদের উপর প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উত্তেজনার ফলাফল সম্বন্ধে পরীক্ষা করেন। প্রাকৃতিক উত্তেজনার মধ্যে তাপ, আলো ও মধ্যাকর্ষণের ফলাফল, কৃত্রিম উত্তেজনার মধ্যে বৈদ্যুতিক ও তাপীয় আঘাত তার পর্যালোচনার বিষয়। উদ্ভিদের জল শোষণ ও আলোক সংশ্লেষণ প্রভৃতি ছিল তাঁর গবেষণার বিষয়বস্ত্ত। তিনি উদ্ভিদের প্রাণ আছে – এটা মাপার যন্ত্র আবিষ্কার করেন। তিনি ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘ বসুবিজ্ঞান মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর বাংলা রচনা ‘ অব্যক্ত’র মধ্যে সৌন্দর্য প্রিয় শিল্পী মনের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানাচার্য, ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে স্যার উপাধিতে ভূষিত হন। তাঁর অন্যান্য রচনাবলী Plant Responses as a Means of Plysiological Investigations, Physio logy of the Ascent of Sap. Physiology of Photosynthesis. Nervious Mechanism of Plants, Motor Mechanism of Planta Growth and Topic Movement in Plants প্রভৃতি।
জগদীশচন্দ্র বসু ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ নভেম্বর পরলোকগমন করেন।
© 2011 – 2018, https:.