মুক্তিযুদ্ধ

যুদ্ধদিনের গদ্য

তাঁর নাম বাকি মোল্লা। বয়স আটষট্টির মত। একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের গুলির আঘাতে কেটে ফেলতে হয় তাঁর ডান পা। শরীরের ভারে বাঁ পা-ও এখন বেঁকে গিয়েছে। ফলে হাঁটতে পারেন না, শুধু শরীরে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারেন। জীবনের হিসেব তাঁর মিলে না। তাই বুকে পুষে রাখা কষ্ট এবং কান্না-হাসির মাঝে কেটে যাচ্ছে তাঁর দিনগুলি।
খবর পেয়ে একদিন আমরা পা রাখি বাকি মোল্লার বাড়িতে।
মিরপুর চিড়িয়াখানার পাশেই একটি খুঁপরি ঘরে আমরা খুঁজে পাই মুক্তিযোদ্ধা বাকি মোল্লাকে। টিনে ঘেরা ছোট্ট ঘর। একটি চৌকি, টেবিল ও একটি হুইলচেয়ার ছাড়া তেমন কিছুই চোখে পড়ল না। যুবক বয়সী একজন পাশের ঘর থেকে নিয়ে এলো একটি কাঠের বেঞ্চ। সেখানে বসেই আমরা চোখ রাখি বাকি মোল্লার চোখে।
পরিচয় দিতেই তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কেন আইছেন?
আপনার কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা আর দেশের কথা শুনতে।
তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। পরক্ষণেই চোখ ভেজান বুকে পুষে রাখা কষ্টের স্মৃতিগুলো অনুভব করে।
স্বাধীনতার জন্য শুধু অঙ্গ নয়, এই যোদ্ধা হারিয়েছেন তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টুকুও। দেশের জন্য আত্মত্যাগের প্রতিদান তিনি চান না। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের পর অন্যদের সঙ্গে নিজের জীবনের হিসেবটুকুও তিনি মেলাতে পারেন না। তিনি শুধু বললেন, ‘আমরা তো ভিখেরির মত বেঁচে আছি। কর্তব্য ছিল, করে দিছি। এখন যদি হাজারও মাথা ঠুকি, আপনি পারবেন না আমার একটা অঙ্গ ফিরায়া দিতে। শরীরের ভারে বাম পা-ও বেঁকে গেছে। বসতে পরি না। চলতে পারি না। এত কষ্ট লাগে আমার।’
বাকি মোল্লা যুদ্ধ করেন ৭নং সেক্টরের সাব সেক্টর লালগোলা ডাক বাংলা ক্যাম্পের অধীনে। প্রথম অপারেশনেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সেদিনের আদ্যোপান্ত শুনি মুক্তিযোদ্ধা বাকির জবানিতে:
‘১৯৭১ সালের জুনের প্রথম সপ্তাহের ঘটনা। রাজশাহীর বাসুদেবপুর অপারেশন। খবর ছিল ভিতরবাগ, মইরবাগ থেকে পাকিস্তানি সেনাদের একটি বহর যাবে নন্দনগাছির দিকে। আমরা মাত্র ২৫-৩০জন। কমান্ডে নায়েক সুবেদার কাশেম। আমাদের কাছে ছিল মার্কও রাইফেল। রাতে আমরা পজিশন নিই আড়ানি ব্রিজের পাশে। ভোর হয়-হয়। পাকিস্তানি সেনারা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে আসছিল। আতঙ্ক তৈরি করে ওরা এভাবেই পথ চলত।
ব্রিজের কাছাকাছি আসতেই আমরা দুইপাশ থেকে আক্রমণ করি। গুলি ছুঁড়ে আমি দৌড়ে সামনে আগাইতে যাই। অমনি একটা গুলি আইসা লাগে আমার ডান পায়ের হাঁটুতে। আমি দুই লাফ গিয়ে ছিটকে পড়ি। শরীরটা তখন দুইটা ঝাড়া দেয়। প্রথম বুঝতে পারি নাই। অসহায়ের মত পড়ে ছিলাম। মৃত্যুভয় তাড়া করছিল। সহযোদ্ধারা আমাকে টেনে পেছনে এক গ্রামের ভেতর নিয়ে যায়। পরে একটা দরজার পাল্লায় শুইয়ে আমাকে নেওয়া হয় আড়আলীর বাজারে। ওইখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সন্ধ্যায় সাগরপাড়া ক্যাম্পে এবং সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদের বহরমপুর হাসপাতালে। ওইখানেই অপারেশন করে আমার ডান পা হাঁটুর উপর এক বিঘাত থেকে কেটে ফেলা হয়। জ্ঞান ফিরতেই দেখলাম পা-ডা নাই।’

এক পা হারালেও মুক্তিযোদ্ধা বাকি বেঁচে আছেন, এটাই ছিল তাঁর সান্ত্বনা। স্বাধীন দেশে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সুখের সংসার করবেন। বাড়িতে রেখে আশা অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর কোলে দেখবেন ফুটফুটে নবজাতক। স্বাধীনতার পর এমন স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরে তিনি দ্বিতীয়বার রক্তাক্ত হন। বাকি মোল্লার ভাষায়:
“আমি স্টেশনে নামি, এক হাজির পোলা মধু আমারে দূর থেকে দেখে ছুটে আসে, ‘কী রে, ভাই বাকি?’ জড়িয়ে ধরে বলে, ‘আহা রে তোর পরিবারডা মারা গেল। পেটের সন্তানডাও মরিছে। তুই দেখতে পারস নাই।’ শুনেই আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। আমার স্ত্রী কুলসুম বড় ভালো মানুষ ছিল। স্বাধীনতার জন্য তারেও হারালাম!”আরেক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল কুদ্দুস মীর। ১১ নং সেক্টেরের অধীনে তিনি গেরিলা অপারেশন করেন নেত্রকোণায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাম পায়ের হাঁটুর উপরে মারাত্মকভাবে গুলিবিদ্ধ হন। ফলে তিনি চলছেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। বয়স ষাটোর্ধ্ব। তবুও গুলিবিদ্ধ হওয়ার রক্তাক্ত সে দিনটি আজও তাঁর কাছে জীবন্ত। শুনব তার মুখ থেকে:

‘১৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১। রাত তহন ১১ টা। নেত্রকোণার নেতাই নদীর পাড়ে আমরা পুরা প্লাটুন। কমান্ডে নির্মল দত্ত। পাকিস্তানি সেনারা পূর্বধলা থেকে অ্যাডভান্স হইছিল। ওদের ঠেকানোর জন্যই নদীর তীরে আমরা পজিশন লই। আমাদের কাভারিংয়ের জন্য পজিশনে ছিল রজব কোম্পানি ও ১ নম্বর সেকশন। পেছনে ভারতীয় সেনারা। ওরা পূর্বধলা পার হয়েছে খবর পাইয়া আমরা ভারতীয় সেনাদের ম্যাসেজ পাঠাই। তারা টুআইস মটর ছাড়তে থাকে। পাকিস্তানি সেনারা তহন ঘাবড়ে যায়। ধীরে ধীরে পিছু হটে। এ সুযোগে আমরা অ্যাডভান্স করি।
বৃষ্টির মতো গুলি চলছিল। আমি আইলে শুয়ে স্ট্যানগান চালাচ্ছি। পাশেই এলএমজি ম্যান হারুনুর রশিদ। আমার ডান দিকে এবাদত আলী। হঠাৎ একটা গ্রেনেড এসে পড়ে হারুনের সামনে। আমি তাকে পা দিয়া ধাক্কা দিতেই সে দূরে ছিটকে পড়ে। গ্রেনেডের বিস্ফোরণ হলেও সে যাত্রায় সে বাঁইচা যায়। আইলে আমি একটু উঁচুতে ছিলাম। চু করে একটি গুলি এসে লাগে আমার বাম পায়ে। গুলিটি আমার হাঁটুর ওপর দিয়ে বিদ্ধ হয়। প্রথম কিছুই টের পাইনি। মনে হয়েছে সাপে কাটছে। বাম পা টানতে পারছিলাম না। কী হলো পায়ে? হাত দিতেই অনুভব করি পিনপিন করে রক্ত বেরোচ্ছে। রক্ত গেলেও জ্ঞান হারাই নাই। সহযোদ্ধারা আমাকে পেছনে টেনে পাঠিয়ে দেয় মোড়ল বাড়ি ক্যাম্পে। পরে সেখান থেকে পুনা হাসপাতালে। অপারেশন করে সেখানেই গুলি বের করা হয়।’
আমাদের কথা হয় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ তারা মিয়ার সঙ্গে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন ২নং সেক্টরে। এছাড়াও বিচ্ছু বাহিনীতে গোয়েন্দার কাজ করতেন। পাকিস্তানি সেনাদের আর্টিলারির আঘাতে জখম হয় তাঁর স্পাইনাল কর্ডে। পরে সেখানে ইনফেকশন হওয়াতে তাঁর দু’পা প্যারালাউজড হয়ে যায়। বর্তমানে হুইল চেয়ারই তাঁর একমাত্র অবলম্বন।
আলাপচারিতার শুরুতেই ভদ্রতাবশত প্রশ্ন করেছিলাম, ‘কেমন আছেন?’
চোখেমুখে কষ্ঠ ছড়িয়ে তিনি বলেন, ‘দেখতেই তো পারতাছেন, এইডা কোনও মাইনসের জীবন! স্বাধীন হইয়া দেশটা তো একাই চলছে। আমি চলছি অন্যের সাহায্যে।’
আহত হওয়ার ঘটনা জানতে চাইলে খানিকক্ষণ নীরব থেকে তারা মিয়া বলেন:
‘আমরা ছিলাম তারাবোতে। পেছনে ভারতীয় আর্মি। মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি দলও যোগ দিছে। শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে লতিফ ভবানি জুট মিল। সেখানে ছিল পাকিস্তান সেনাদের শক্তিশালী ক্যাম্প। আমরা ক্যাম্পটা দখল কইরা অ্যাডভান্স হইয়া ঢাকা দখলে নিব, এমন ছিল পরিকল্পনা।
১২ ডিসেম্বর, ১৯৭১। সকাল তখন ১১ টার মত। আমি ফেরিঘাটের কাছে পজিশনে। সঙ্গে মেশিনগান। ওরা গুলি ছুঁড়লে আমরাও ছুঁড়ি। ওরা ফেরি দিয়ে এই পাড়ে আসতে চাইত। কিন্তু আমরা ওগোরে ঠেকায়া দিতাম। এই ভাবেই চোখের সামনে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হইল।
হঠাৎ বৃষ্টির মত আর্টিলারি পড়তে থাকে। আমি তখন শরীর লুকাই একটা দেওয়ালের পাশে। কিছু বুইঝা ওঠার আগেই একটা আর্টিলারি আইসা পড়ে দেওয়ালে। পরে তার কিছু অংশ ছিটকা আইসা আঘাত করে আমার পেছনে, মাজার জয়েন্টে। চিৎকার দিয়া আমি উপুড় হইয়া পড়ি। অমনি পুরা দেওয়ালডাও ধইসা পড়ে আমার শরীরের ওপর। সহযোদ্ধারা তুইলা নিয়া পাঠায়া দেয় নরসিংদী হাসপাতালে। চিকিৎসার পর ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটতে পারতাম। কিন্তু স্পাইনাল কর্ডে  যে ইনফেকশন হইয়া গেছিল টের পাই নাই। ধীরে ধীরে ব্যথা বাড়তে থাকল। আস্তে আস্তে পঙ্গুই হইয়া গেলাম।’

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক মতিউর রহমান। বাড়ি তাঁর নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার চর মল্লিকপুর গ্রামে। মতিউর আহত হন ২ নং সেক্টরের এক অপারেশনে। পাকিস্তানি সেনাদের ব্রাশফায়ারে তাঁর ডানহাতের বাহুর হাড় গুঁড়ো হয়ে যায়। কী ঘটেছিল রক্তাক্ত সে দিনটিতে? তাঁর ভাষায়:
‘চন্দ্রপুর গ্রামে ছিল আমাদের সি কোম্পানির ডিফেন্স। কমান্ডে লেফটেন্যান্ট আজিজ। সেখান থেকে দুইশ গজ উত্তরে লতিয়া মোড়ায় ছিল পাকিস্তানিদের শক্তিশালী ঘাঁটি। তারা অস্ত্র সেখানে জমা করে আগরতলার দিকে আর্টিলারি ছুঁড়ত। আমরা দেড়শ মুক্তিযোদ্ধা। অন্য পাশে ছিল ইন্ডিয়ান আর্মির একটি কোম্পানি। তিন দিন ধরে চলে রেইকি ও ব্রিফিং।
২১ নভেম্বর, ১৯৭১। রাত ১২টার পর অপারেশ শুরু হয়। ইন্ডিয়ান আর্মিরা আক্রমণ করে লতিয়া মোড়ার পূর্ব দিকে। রেললাইনের ওপর দিয়ে ক্রলিং করে চন্দ্রপুর গ্রামের পূর্বদিকে আমরা এগোই। পরিকল্পনা ছিল ওদের বাঙ্কারের পেছনে পৌঁছে আমরা ফায়ার ওপেন করব। কিন্তু তা হলো না। একশ গজের ভেতরে প্রবেশ করতেই ওরা ফায়ার ওপেন করে দেয়। বেরি লাইট নিক্ষেপ করে আমাদের অবস্থানটা জেনে যায়। ধানক্ষেতে আমরা তখন পজিশন নিই।
তুমুল গুলি চলছিল। পাশে লেফটেন্যান্ট আজিজ, উত্তরে হাবিলদার আবদুল হালিম বীর বিক্রম। শোঁ শোঁ করে গুলি আসছে। খানিক পরেই দেখি তাদের নিথর দেহ পড়ে আছে। নিজেকে সামলে নিই। ক্রলিং করে দক্ষিণ পাশের একটি বাঙ্কারের নিচে আসি। আমার হাতে একটা থাট্টি সি হ্যান্ড গ্রেনেড। অপেক্ষায় থাকি। ফায়ার বন্ধ হলেই থ্রো করব। তাই করলাম। কিন্তু সে মুহূর্তেই ব্রাশ এসে লাগে আমার ডান হাতে।
প্রথম কিছুই বুঝিনি। মনে হলো কেউ যেন রাইফেল দিয়ে হাতে বাড়ি দিয়েছে। ডান হাত কোথায়? কোনও বোধ নেই। ভাবলাম, হাত কেটে পড়ে গেছে। পরে খেয়াল করে দেখি ডানহাতের বাহুর হাড় গুঁড়ো হয়ে হাতটি পেছনে উল্টো হয়ে উঠে গেছে। প্রচণ্ড ব্যথা। সহযোদ্ধারা ইনজেকশন দিতেই আমার শরীর ঢলে পড়ে। যখন জ্ঞান ফিরল, দেখলাম আমি আসামের গৌহাটি হাসপাতালে।’যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ বশির উদ্দিন। বাড়ি সিলেটের গোয়াইন ঘাট উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। তিনি ছিলেন ৫নং সেক্টরের ডালডা কোম্পানির ৩০ জনের একটি প্লাটুনের কমান্ডার। ১৯৭১ সালে এক অপারেশনে পাকিস্তানি সেনাদের গুলি এসে লাগে তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুর উপরে। চিকিৎসার পর হাঁটতে পারলেও তিনি পা ভাঁজ করতে পারেন না। সেদিনকার কথা শুনি তাঁর জবানিতে:
‘পাকিস্তানি সেনাদের হেভি ডিভেন্স ছিল উমাইরগাঁয়ে। ২১ নভেম্বর, ১৯৭১। গৌড়নদী থেকে রাতেই অ্যাডভান্স হয়ে আমরা পজিশন নিই উমারইগাঁওয়ের উত্তর দিকে। পেছনে ইন্ডিয়ান ঘুরকা গ্রুপ। তাদের পেছনে ছিল ইপিআর, পুলিশ, আর্মিসহ আমাদের আরেকটি দল।
২২ নভেম্বর। তখন ফজরের আজান হচ্ছে। পরিকল্পনা মোতাবেক ভারতের তালাব বাজার থেকে মর্টার ছোঁড়া হয়। এর পরপরই আমরা ফায়ার ওপেন করি। সারাদিন চলে গোলাগুলি। বিকেল তখন ৪টা। হঠাৎ খেয়াল করলাম ওদের গুলি বন্ধ। বুঝে গেলাম ওরা পালিয়েছে। আমরা তখন ‘জয় বাংলা’ বলে ওদের ডিফেন্সে ঢুকে বাঙ্কারগুলো চেক করতে থাকি। আমার পাশেই এলএমজির টোআইসি রমিজ উদ্দিন। দুজন মিলে বাম সাইডের শেষ বাঙ্কারটি চেক করছিলাম। ওরা তখন বাম পাশ থেকে কাউন্টার অ্যাটাক চালায়।
আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। হঠাৎ দেখলাম রমিজ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। একটি গুলি বিদ্ধ হয়েছে তার মাথায়। শরীরটা কয়েকবার ঝাঁকি দিয়ে তার দেহখানা নিথর হয়ে গেল। আমি তাকে ধরতে যাব, অমনি আরেকটি গুলি এসে লাগে আমার বাঁ পায়ের হাঁটুর ওপরে। আমি ছিটকে পড়ি। পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখি পিনপিনিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। আমাদের পেছনের গ্রুপটি পাল্টা অ্যাটাক করলে ওরা তখন পালিয়ে যায়। সে অপারেশনে শহীদ হয় রমিজ। আহত হই আমি, খাইরুল, নিজামসহ চারজন।’
এরকম প্রান্তিক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ ও বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার বর্ণনাগুলোই আমাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে তুলে ধরে। শত বছর পরেও কেউ যখন এ ইতিহাসের কথা জানবেন, তখন যাঁরা এ স্বাধীনতা এনেছেন, সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা ভেবে গর্বে তার বুক ভরে উঠবে। এভাবেই যুদ্ধদিনের গদ্যগুলো বেঁচে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

লিখাটি প্রকাশিত হয়েছে বাংলানিউজ২৪.কমে, ২৬মার্চ ২০১৫ এর বিশেষ সংখ্যায়

© 2015 – 2018, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button