শেখের মাইয়া ইতিহাসের দায় থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন
হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার ডান হাত ও বুকের বাম পাশটা ভেজা। হাত দিয়ে স্পর্শ করতেই বুঝে যাই রক্তে ভিজে যাচ্ছে। কখন যে আমার শরীরেও স্প্লিন্টারে বিদ্ধ হয়েছে টেরই পাইনি। খানিক পরে আবিষ্কার করলাম ডান হাতে কব্জির একাংশ ও তর্জনি উড়ে গেছে। ভেবেছি সহযোদ্ধাদের মতোই মারা পড়ব। মায়ের মুখটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। রক্ত গিয়ে শরীরটা একসময় ঝিমিয়ে পড়ে। আমার অবস্থা দেখে পাশ থেকে হামিদ চিৎকার দিয়ে ওঠে। তখন অন্য সহযোদ্ধারাও এগিয়ে আসে। শেলের আলোর ঝলকানি দিয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসে আমার দৃষ্টি।
দেশ তখন উত্তাল। পশ্চিম পাকিস্তানিরা নানাভাবে শোষণ করছিল আমাদের ওপর। কাগজ এখানেই তৈরি হত। কিন্তু সেই কাগজই আমাদের কিনতে হত চড়া দামে। পাট বিক্রির টাকায় উন্নত হত পশ্চিম পাকিস্তান। অথচ আমাদের রাস্তাঘাটগুলো ভাঙাই থাকত। যোগ্যতা থাকলেও অফিস-আদালতের বড় বড় পোস্টে বাঙালিদের যেতে দেওয়া হত না। পাঞ্জাবিরা আমাদের ‘বাঙাল’ বলে গালি দিত। এসব বৈষম্যের প্রতিবাদ করতে থাকে বাঙালিরা। তাদের অধিকারের জন্য পথে নামে শেখ মুজিব। সারা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেন তিনি। এ খবরগুলো তখন পৌঁছে যেত গ্রামে গ্রামে।
বড়দের মুখে শোনা সে খবরগুলো শাহজাহানের মনে ঝড় তুলত। এভাবেই তাঁর প্রতিবাদী মন উদ্দীপ্ত হত।
৭ মার্চ ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণ দেন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে। শাহজাহান সে ভাষণ শোনেন রেডিওতে। বঙ্গবন্ধু বললেন:
“তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শক্রুর মোকাবেলা করতে হবে…আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি…।”
রক্ত গরম করা সে ভাষণ শাহজাহানের জীবন ওলটপালট করে দেয়। ওই দিনই তিনি বুঝতে পারেন, রক্ত ছাড়া স্বাধীনতা মিলবে না।
২৫ মার্চের পর সারা দেশে আর্মি নামে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় তারা। হত্যা করতে থাকে নিরীহ নিরাপরাধ মানুষকে।
পারিবারিকভাবে শাহজাহানরা ছিলেন স্বচ্ছল। জমিজমারও কমতি ছিল না। কিন্তু দেশ যদি পরাধীন থাকে তবে সে জমির তো মূল্য নেই। শাহজাহান ভাবেন, সবার আগে দেশকে শক্রমুক্ত করতে হবে। বাঁচাতে হবে মাতৃভূমিকে। এমন চিন্তা থেকেই এক রাতে তিনি গোপনে বাড়ি ছাড়েন। যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার কথা এভাবেই জানাচ্ছিলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান লস্কর।
তাঁর বাবার নাম আব্দুল সোবহান লস্কর, মা বটফুল বেগম। তিন ভাই ও এক বোনের সংসারে শাহজাহান সবার বড়। গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছটি উপজেলার দক্ষিণ কামদেবপুর গ্রামে।
শাহজাহানের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে গ্রামের বাড়িতে। তাঁর পছন্দের খেলা ছিল ফুটবল আর হাডুডু। বাল্যবন্ধু রশিদ হাওলাদার ও খলিল জমারদারের সঙ্গে এ গ্রাম ও গ্রাম ছুটে বেড়াতেন। দল বেঁধে দারিয়াবান্ধা খেলা আর মাছ ধরাতেই তাদের আনন্দ ছিল বেশি।
লেখাপড়ায় শাহজাহানের হাতেখড়ি কামদেবপুর প্রাইমারি স্কুলে। সেখানে পঞ্চম শ্রেণি পাসের পর তিনি ভর্তি হন নাছোব মহাল উচ্চ বিদ্যালয়ে। ওখানেই নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন তিনি। পরে নানা কারণে তাঁর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর তিনি যুক্ত হন বাবার কৃষি পেশায়।
ট্রেনিং নিলেন কোথায়?
“তারিখটা ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ। নিকট আত্মীয় মান্নান মোল্লাসহ আমরা গ্রাম থেকে গোপনে চলে যাই মুক্তিযুদ্ধে। খুলনা দৌলতপুর হয়ে পৌঁছি দিগলিয়া ইউনিয়নের দিগলিয়া গ্রামে। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে সেখানে একত্রিত হয় আরও যুবকরা। মেজর জিয়াউদ্দিন ছিলেন সেখানে। আমরা তাঁর গ্রুপেই যোগ দিই। সাতদিনের স্বল্পমেয়াদি ট্রেনিংয়ে আমাদের শেখানো হয় গ্রেনেড নিক্ষেপ ও হালকা রাইফেল চালনা। অতঃপর শুরু হয় অপারেশন।”
দিগলিয়া ছাড়াও শাহজাহানরা ৯ নং সেক্টরের অধীনে দৌলতপুরের বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ করেন। তাদের কমান্ড করতেন মেজর জিয়াউদ্দিন। ইউনিট কমান্ডার ছিলেন আব্দুল মান্নান।
মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের ভূমিকা প্রসঙ্গে কথা বলেন মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান। তাঁর ভাষায়:
“সাধারণ মানুষের সহযোগিতা না থাকলে গেরিলারা টিকতে পারত না। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাবার ও পানি দিয়ে সাহায্য করত গ্রামের সাধারণ মানুষেরা। অনেকেই নানা খবরাখবর পৌঁছে দিত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এ কারণেই অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ওপর মুক্তিযোদ্ধারা সহজেই গেরিলা আক্রমণ করে সরে যেতে পারত। আবার উল্টোটাও ঘটেছে। কেউ কেউ ছিল পাকিস্তানিদের পক্ষে। তারা আমাদের আপ্যায়নে ব্যস্ত রেখেই খবর দিয়ে আসত আর্মি ক্যাম্পে। এ কারণে আমরাও খোঁজখবর নিয়ে সাধারণ মানুষের সাহায্য গ্রহণ করতাম।”
এক অপারেশনে মারাত্মকভাবে আহত হন এই সূর্যসন্তান। পাকিস্তানি সেনাদের মর্টার শেলের স্প্লিনটারের আঘাতে তাঁর ডান হাতের কব্জির একাংশ ও তর্জনি উড়ে যায়। ফলে সারা জীবনের জন্য হাতটি কর্মক্ষমতা হারায়। স্প্লিনটারে বিদ্ধ হয় বুকের পাশ ও বাম হাতের জয়েন্টও।
কী ঘটেছিল রক্তাক্ত ওই দিনটিতে? প্রশ্ন শুনে মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান স্মৃতিকাতর হন। অতঃপর বলতে থাকেন ওই দিনের আদ্যোপান্ত:
“দিগলিয়া গ্রামে ছিল পাকিস্তানি সেনাদের ছোট্ট একটি ক্যাম্প। ওই ক্যাম্প উড়িয়ে দিতে হবে। এমন নির্দেশ আসে আমাদের কাছে। আমরা আক্রমণের পরিকল্পনা সেরে নিই। ২৯ মে ১৯৭১। সন্ধ্যার পর পরই আমরা ক্যাম্প থেকে বের হই। ক্রলিং করে এগোতে থাকি। একসময় পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পের কাছাকাছি পজিশন নিই। আমরা ছিলাম ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা।
“রাত তখন ৮টা। কথা ছিল দলের লিডার প্রথম গুলি ছুঁড়বেন। তা-ই হল। সঙ্গে সঙ্গে আমরাও সম্মিলিতভাবে গুলি ছুঁড়তে থাকলাম। এভাবে চলল খানিক সময়। পাকিস্তানি সেনারা তখন পাল্টা অ্যাটাক করে। শত শত মর্টারের শেল এসে পড়ে আমাদের ওপর। শেলের স্প্লিনটার প্রচণ্ড শব্দে ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারপাশে।
“ওদের আক্রমণের কাছে আমরা টিকতে পারি না। আমি ছিলাম স্লিপিং পজিশনে। চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুজন সহযোদ্ধাকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখলাম। স্প্লিন্টারের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয় তাদের দেহ। তাদের আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে ওখানকার বাতাস। আমি শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলাম। কিছুই করার ছিল না! বুকের ভেতরটা দুপদুপ করছিল। সহযোদ্ধাদের মৃত্যু যন্ত্রণা বাড়িয়ে দেয় মৃত্যুভয়কে।
“হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার ডান হাত ও বুকের বাম পাশটা ভেজা। হাত দিয়ে স্পর্শ করতেই বুঝে যাই রক্তে ভিজে যাচ্ছে। কখন যে আমার শরীরেও স্প্লিন্টারে বিদ্ধ হয়েছে টেরই পাইনি। খানিক পরে আবিষ্কার করলাম ডান হাতে কব্জির একাংশ ও তর্জনি উড়ে গেছে। ভেবেছি সহযোদ্ধাদের মতোই মারা পড়ব। মায়ের মুখটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। রক্ত গিয়ে শরীরটা একসময় ঝিমিয়ে পড়ে। আমার অবস্থা দেখে পাশ থেকে হামিদ চিৎকার দিয়ে ওঠে। তখন অন্য সহযোদ্ধারাও এগিয়ে আসে। শেলের আলোর ঝলকানি দিয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসে আমার দৃষ্টি। এরপর আর কিছুই মনে নেই।”
শাহজাহানকে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় ক্যাম্পে। পরে ছয় মাস চিকিৎসা চলে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে। প্রাণে বেঁচে গেলেও কর্মক্ষমতা হারায় তাঁর ডান হাতটি।
নভেম্বরের প্রথম দিকে তিনি ফিরে আসেন নিজ গ্রাম কামদেবপুরে। গ্রামটি তখন হানাদারমুক্ত ছিল। মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না শাহজাহানের। মা ভেবেছিলেন ছেলে মারা গেছে। বাড়ি ফিরতেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরিয়ে খুশিতে কাঁদতে থাকেন তিনি। মায়ের ছোঁয়া আর ভালবাসায় শাহজাহানও ভুলে যান তাঁর দুঃখময় স্মৃতিগুলো।
স্বাধীনতার জন্য রক্তাক্ত হয়েছেন– এ নিয়ে কোনো আসফোস হয় কি না? জানতে চাই আমরা।
মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহানের উত্তর, “স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় সুইজারল্যান্ডে। ওই চিকিৎসাটা না হলে হয়তো শরীরে পয়জন ছড়িয়ে পড়ত। বেঁচে থাকা তখন সম্ভব হত না। দেশটা স্বাধীন না হলে মনে অনেক দুঃখ পেতাম। এখন কোনো আফসোস নাই। জখমের কারণে ডান হাত দিয়ে কাজ করতে পারি না। তবুও গ্রামের মানুষ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান করে। সবার দোয়াতেই তো আজ বেঁচে আছি। এখন মৃত্যু আসলেও স্বাধীন দেশেই শেষ নিঃশ্বাসটা নিয়ে মরতে পারব। এর চেয়ে সুখের আর কী আছে!”
স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান চাকরি নেন জিপিওতে। অবসরে যান ২০০৭ সালে। যুদ্ধাহত ও অবসর ভাতা থেকে যা পান তাই দিয়ে চলে তাঁর পরিবার। চার মেয়ের জনক এই মুক্তিযোদ্ধা। ছোট মেয়ে সালমা আক্তার ইতি সাইকোলজিতে মাস্টার্স করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে নিয়ে গর্বিত ইতি, “মাঝেমধ্যে ক্লাসে কোনো শিক্ষক কিংবা সহপাঠীরা যখন জানতে চায় আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবার কথা, তাঁর আহত হওয়ার ঘটনাটি। তখন সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করি।”
দেশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তার ভাবনাগুলো জানতে চাই আমরা। ইতি বলেন, “সরকার আমাদের কোনো সুবিধা না দিলেও আমার বাবা যেমন দেশের জন্য রক্ত দিয়েছেন তেমনি আমিও চাই কাজের মধ্য দিয়ে সততার সঙ্গে দেশের সেবা করতে। সরকার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরির সুবিধা দিচ্ছে। এটা ভালো। কিন্তু সেই সুবিধাগুলো পাচ্ছে শুধুমাত্র উচ্চশ্রেণিরর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা। এ দিকটাতেও নজর দেওয়া উচিত। তদবির আর লোক ধরাই যদি যোগ্যতা হয়, তবে তো একসময় কোনো সেক্টরেই সৎ আর দক্ষ লোক থাকবে না। তাহলে কীভাবে সরকারের ভিশন বাস্তবায়িত হবে?”
৪৪ বছর পরও কেন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাড়ে? এ প্রশ্নের উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান অকপটে তুলে ধরেন নিজের মতামত:
“মুক্তিযোদ্ধারাও আজ ১৪ নম্বর হয়ে যাচ্ছে। ওই যে টাকাটুকা খায় আর তালিকা ভাঙ্গাচুরা করে। এখন সুবিধা লাভের জন্যই চলছে সব। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য ছাড়া তো মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যায় না। মুক্তিযোদ্ধাদের হাত ধরেই তালিকায় নাম উঠেছে অনেক অমুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের। তাই এর দায় প্রথম মুক্তিযোদ্ধাদেরই। তবে সরকারের কঠোরতার অভাবও ছিল। এ কারণেই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বিতর্কিত হয়েছে।”
দেরিতে হলেও দেশে চিহিৃত যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচার হচ্ছে। কয়েকজনের ফাঁসিও কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মনে করেন, এতে দেশে আইনের শাসন যেমন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের বুকে জমে থাকা আর্তনাদ ও চাপা কষ্ট থেকে মুক্তি মিলেছে। এ জন্য তিনি মন থেকে দোয়া করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
“রাজাকাররা ক্ষমতায় না থাকলে বহু আগেই রাজাকার, আল বদর, আল শামস নেতাদের বিচার হত। জিয়া এদের পুনর্বাসিত করে ইতিহাসকে করেছেন কলঙ্কিত। বিএনপির হাত ধরেই রাজাকাররা ফুলেফেঁপে কলাগাছ হয়েছে। শেখের মাইয়া ইতিহাসের দায় থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন।”
একই সঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা প্রসঙ্গে বলেন, “বঙ্গবন্ধু বড় মনের মানুষ ছিলেন। বড় বড় রাজাকারগো তো তিনি ক্ষমা করেন নাই। কিন্তু ছোট যুদ্ধাপরাধীদেরও ক্ষমা না করে আইনের আওতায় আনা দরকার ছিল।”
স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভালো লাগা জানতে চাই আমরা। উত্তরে এই বীর যোদ্ধা বলেন:
“ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নতিগুলো দেখলে ভালো লাগে। কৃষি ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়েছি। আমার দেশের সোনার ছেলেরা সারা পৃথিবীতে সম্মানের সঙ্গে কাজ করছে। লাখো শ্রমিক কাজ করছে গার্মেন্টসগুলোতে। এগুলো দেখলে মন ভরে যায়। দেশটা পাকিস্তান থাকলে কি এটা হত?”
খারাপ লাগে কখন?
“দেশের অধিকাংশ স্থানেই দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক নেতারা নিজের উন্নতিতে ব্যস্ত। স্বাধীন দেশে গরিব আরও গরিব হচ্ছে। ধনিরা নিজেদের ভাবছেন ‘ভগবান’। এমন দেশ তো আমরা চাইনি, বাবা। শেখের মাইয়া চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি একা কতটুকু করতে পারবেন? কাজের প্রতি সবাই সৎ থাকলে দেশটা সত্যি পাল্টে যেত।”
দেশে নানা সমস্যা থাকলেও পরবর্তী প্রজম্মকে নিয়ে স্বপ্নে বিভোর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান লস্কর। তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন:
“আমরা রক্ত দিয়ে দেশটা স্বাধীন করেছি। তোমাদেরই দায়িত্ব দেশটাকে এগিয়ে নেওয়ার। নিজেদের মধ্যে হানাহানি কোরো না। শত বিপদেও মনোবল হারাবে না। মনে রাখবা তোমরা বীর জাতির সন্তান। কোনো বাধাই তোমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।”
লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে, প্রকাশকাল: ৮ জানুয়ারি ২০১৭
© 2017 – 2018, https:.