‘বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি’ মিরপুরের একাডেমিয়ায়
‘আজ সারাবেলা’ ও ‘সুচিন্তা ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি’ শীর্ষক দেশজুড়ে, বছরজুড়ে কার্যক্রমে ১২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে আয়োজন ছিল মিরপুর সাড়ে এগার নম্বর একাডেমিয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বিদ্যালয়ের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী।
এবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক, কালি ও কলম পদকপ্রাপ্ত লেখক- সালেক খোকন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একশ’রো বেশি মুক্তিযোদ্ধার। জেনেছেন কিভাবে মাইনের আঘাতে মুক্তিযোদ্ধাদের পা উড়ে গেছে, কেউ বুলেটের আঘাতে চোখ হারিয়েছেন, গুলি লেগে আহত অবস্থায় বিলের মধ্যে রাত কাটানো, শরীরে স্প্লিন্টার বয়ে বেড়ানো যন্ত্রণাসহ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনের নানা অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে গল্পাকারে তুলে ধরেন সালেক খোকন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আব্দুল কাদের নামে একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সম্মুখ যুদ্ধ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক পাকিস্থানী ক্যাম্প তারা দখল করে। দখলের আনন্দে উল্লাস করতে থাকেন তিনি এবং তার সঙ্গের যোদ্ধারা। হঠাৎ করে হানাদার বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইনে পা পড়ে আব্দুল কাদেরের, মুহুর্তেই ছিটকে পড়েন তিনি। দেখতে পান গাছ উপরে ফেলার পর শিকড়গুলো যেভাবে বেড়িয়ে থাকে, ঠিক তেমনি তার পায়ের সমস্ত রগগুলো ঝুলে আছে, তারপরই জ্ঞান হারান। পরবর্তীতে তাকে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়। তার পুরো পা’টি কেটে ফেলা হয়েছিল। এরকম অনেক মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধের অভিজ্ঞতা এবং তাদের অবদান তুলে ধরেন সালেক খোকন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম ও নেতৃত্ব নিয়ে বক্তব্য রাখেন বির্তাকিক ও অর্থনীতি বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব।
স্বাধীন দেশ এবং পরাধীন দেশের পার্থক্য তুলে ধরে তিনি বলেন, নিজেকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কারণেই আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের স্বাধীন অস্তিত্ব নিয়ে সম্মানের সঙ্গে কাজ করে যেতে পারছি। তাই নিজেকে ভালোবাসার জায়গা থেকেই বঙ্গবন্ধুর মত মহান মানুষটিকে জানতে হবে, ধারণ করতে হবে চেতনায় ও অস্তিত্বে। কারণ বাঙালির সবচেয়ে বড় অস্তিত্ব তিনি।
‘বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনি, মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি’ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ‘আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জববার হোসেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এই কার্যক্রমের সমন্বয়ক রবিউল ইসলাম রবি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। আয়োজিত কার্যক্রমের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল নীলসাগর গ্রুপ ও নর্দান ইউনিভার্সিটি।
© 2017 – 2018, https:.