মুক্তিযুদ্ধ

স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের ভূমিকাও কম ছিল না

বীরগাথা ১৯৭১

ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত ছিলেন আবু জাফর চৌধুরী। বাবা ছিলেন প্রভাবশালী মানুষ। নাম নজমুল হুদা চৌধুরী। দশ গ্রামের সবাই তাঁকে এক নামে চেনে। চাকরি করতেন চট্টগ্রাম কোর্টে, অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টরেট ছিলেন। আবু জাফর তখন রাউজানের আর্য্যমত্রৈ হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। হেডমাস্টার তার বাবার বন্ধু। ছাত্রদের খুব পেটাতেন তিনি। দুষ্ট হওয়ায় নিয়মিতই বেতের বাড়ি পড়ত আবু জাফরের শরীরেও। ফর্সা শরীর। বেতের বাড়ি লাল হয়ে ভেসে উঠত। বাবা দেখে বলতেন–‘বলে দিয়েছি, তোমাকে আরও পেঠাবে।’ কিন্তু মা মর্জিনা চৌধুরী ছেলের কষ্টে কষ্ট পেতেন। বলতেন– ‘আমার ছেলেকে কেন মারবে?’

বাবার স্মৃতিতে অশ্রুসিক্ত হন আবু জাফর চৌধুরী। বলেন–‘বাবা খুব গরম লোক ছিলেন। কিন্তু সামনে গরম দেখালেও রাতে ও পুত ও পুত বলে ডাকতেন। আদরও করতেন ভীষণ। তাঁর হাতে একটা লাঠি থাকত। অনেক বড় হয়েও সে লাঠির বাড়ি খেয়েছি। বাবা অন্যায় সহ্য করতেন না। সম্পদশালী ছিলেন। কিন্তু মানুষের নানা কাজে তা দান করতেন। সাত নম্বর রাউজান ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও ছিলেন তিনি।

পাকিস্তান আর্মি তখন রাউজান কলেজ মাঠে ক্যাম্প করেছে। আমি, হারুন আর সলিমুল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাতে ঘরে মাদুর বিছিয়ে ভাত খাচ্ছি। সামনে বসা আমার মা আর বাবা। খাওয়া শেষে দেখি বাবার চোখে পানি। বাবা যে কাঁদতে পারেন, জীবনেও ভাবিনি। দুহাতে আমার হাত ধরে তিনি শুধু বললেন–‘তুমি আমার একটা ছেলে মাত্র। একটা কথা মনে রাখবা: ঘুষ খাবে না, মদ খাবে না, গাঁজা খাবে না, দেখেশুনে কোনো মানুষকে মারবা না, অন্যায় করবা না, ওয়াদা করো বাবা। দেশের জন্য তোমাকে আল্লাহর হাতে সঁপে দিলাম।’

বাবাকে ছুঁয়ে আমিও সেদিন ওয়াদা করেছিলাম। সেই ওয়াদা এখনো রক্ষা করে চলেছি।’
মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার স্মৃতিকথা এভাবেই তুলে ধরছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর চৌধুরী।

তার বয়স সত্তরের ওপরে। বাইপাস সার্জারির পর এখন জীবন চলছে নানা নিয়মের আবর্তে। তবু দেশ, মাটি ও মানুষের উন্নতির স্বপ্ন দেখেন এই সূর্যসন্তান।
আবু জাফরের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন ওই কলেজেরই ডিগ্রি পরীক্ষার্থী।
১৯৬৯ সালের আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন আবু জাফর। মিছিল-মিটিং করে তাঁরা দাবি জানান শেখ মুজিবের মুক্তির। পাশাপাশি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের কাছে তুলে ধরতেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি নানা বৈষম্যের বিষয়গুলো। কী সেই বৈষম্য?
তিনি বলেন, ‘তখন পশ্চিম পাকিস্তানের রাজস্ব ব্যয় ছিল ৫ হাজার কোটি টাকা। আর পূর্ব পাকিস্তানে তা মাত্র দেড় হাজার কোটি। কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরির কোটা পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল ৮৫% আর পূর্ব পাকিস্তানে ১৫% মাত্র। সামরিক বাহিনীতে ওরা ছিল ৯০% আর আমরা মাত্র ১০%। এসব বৈষম্য তুলে ধরে আমরা জনমত গড়তাম। ছাত্রদের আন্দোলনের কারণেই শেখ মুজিবকে ওরা মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।’
আবু জাফরদের এলাকায় সত্তরের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পক্ষে এমএনএ প্রার্থী ছিলেন যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী। সে সময় তার লোকেরা গুডস হিলের বাড়িতে তুলে নিয়ে যায় আবু জাফরসহ কয়েকজনকে। হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তবু জীবনকে বাজি রেখে তারা বঙ্গবন্ধু আর নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। সে ইতিহাস শুনি আবু জাফরের জবানিতে।

তাঁর ভাষায়–‘আমি তখন রাউজান কলেজের জিএস। ভিপি লোকমান হাকিম, নুরুল আমিন আর শাহজাহানসহ নিচতলায় অফিসে বসে আছি। হঠাৎ একটা লাল জিপে আসে সালাউদ্দিন কাদেরের ফুফাতো ভাই। সে আমাদের চারজনকে উঠিয়ে নিয়ে যায় গুডস হিলের বাড়িতে। যার বিরুদ্ধে প্রতিদিন মিছিল মিটিং আর স্লোগান দিচ্ছি তার মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। তখন মুসলিম লীগ বিরোধীদের এভাবেই তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হতো।
পাহাড়ের ওপরে বাড়িটি। ঢুকতেই বাঘের অবয়বে গেট। আমাদের নিয়ে আসার সংবাদে ভেতর থেকে হা হা হাসির শব্দ। মনে হচ্ছিল কোনো দৈত্য হাসছে। আমার কাছে এসে ফজলুল কাদের বলে– ‘হে ব্যাডা চৌধুরীর পোয়ারে বোয়া, তুই আমার এগেনিস্টে করো দোয়া।’ সবাইরে নানা কথা বলে হুমকি দেওয়া হয় প্রথম। লাস্টে বলে–‘তোদের একটা জিপ গাড়ি দিমু। তোরা আমার জন্য কাজ করবি।’ আমি বুদ্ধি করে বলি আগে বাড়ি গিয়ে বুঝি। মৃত্যুর হুমকিতেও তখন পিছপা হইনি।সত্তরের নির্বাচনে এমএনএ পদে ফজলুল কাদের চৌধুরীকে ৪০ হাজার ভোটে ডিফেট দিয়ে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদকে নির্বাচিত করেছিলাম। রাতদিন পরিশ্রম করেছি। ঘরে ঘরে গিয়ে মা বোনদের নিয়ে এসেছি।’

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুনতে আবু জাফররা যান ঢাকায়, রেসকোর্স ময়দানে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল ছয় দফা না হয় এক দফা। স্বায়ত্তশাসন না মানলে দেশ স্বাধীন করতে হবে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আমাদের একমাত্র নেতৃত্ব। অপেক্ষায় ছিলাম কী বলেন নেতা। তিনি বললেন–‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না…মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ…।’ ওই ভাষণই সবার মনে ঝড় তোলে। বঙ্গবন্ধুর ওই নির্দেশনা নিয়েই রাউজানে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। আর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সেক্রেটারি হই আমি এবং সভাপতি ছিলেন লোকমান হাকিম।’
২৫ মার্চ ঢাকায় আর্মি নামার খবরে আবু জাফররা প্রতিরোধযুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। রাউজান স্কুলের মাঠে চলে যুবকদের ট্রেনিং। এর দায়িত্বে ছিলেন আমিনুর রহমান, আব্দুল হাকিমসহ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা ও বিডিআর সদস্য। ওই সময় ওই ট্রেনিং তাদের মনোবল বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু বাঁশের লাঠি দিয়ে তো সামরিক বাহিনীকে ঠেকানো যায় না। ফলে ১৩ এপ্রিল সকাল থেকে সর্ত্তারঘাট হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাউজানের দিকে আসতে থাকে।’

আপনারা তখন কী করলেন?

আবু জাফরের উত্তর: ‘বিএলএফ বা বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স নামে একটা ছাত্রসংগঠন হয়েছিল। শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন এর প্রধান। চট্টগ্রাম জেলা কমিটিতে ছিলেন এস এম ইউসুফ, এম এ মান্নান, স্বপন চৌধুরী প্রমুখ। রাউজানে বিএলএফ সদস্য ছিল তিনজন–আমি, লোকমান হাকিম সিকদার, শওকত হাফেজ খান রুসদী। ১৩ এপ্রিলের পর এ সংগঠনের নেতারা একত্র হয় রামগড়ে। তখন অনেকেই ট্রেনিংয়ের জন্য ভারতে চলে গেলেও আমি চলে যাই রাঙ্গুনিয়ায়, বোনের বাড়িতে। সেখানে পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে দেখি কাপ্তাইয়ের দিকে পাকিস্তানি সেনাদের ট্যাংক যাচ্ছে। তখন রাজহাট হয়ে গোপনে ফিরে আসি বাড়িতে। দাদির দেওয়া একটি সোনার হার আর কিছু শুকনা খাবার নিয়ে দুই বন্ধুসহ দেশের জন্য ঘর ছাড়ি।’
আবু জাফররা পায়ে হেঁটে চলে যায় ফটিকছড়ি বর্ডারে। সেখান থেকে দুর্গম পাহাড় ও নদীপথে ভারতের সাবুরুম এলাকায়। এস এম ইউসুফের মাধ্যমে তিনি ট্রেনিংয়ের জন্য নাম লেখান। ৪৫ দিনের ট্রেনিং হয় আসামের লোয়ারবন হাফলং ক্যাম্পে। তারা ছিলেন বিএলএফের প্রথম ব্যাচের যোদ্ধা।

পাহাড়ের ওপরে ছিল প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। ক্যাম্পে ব্রিফিং করেছিলেন জেনারেল এস এস উবান। দুই পাহাড়ের মাঝে কসম প্যারেড হয়। শেষের দিন তোফায়েল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক ও আফতাব উদ্দিন সাহেব আসেন। পরে অস্ত্র দিয়ে তাদের আনা হয় উদয়পুরে, জঙ্গলের ভেতর একটা প্রাইমারি স্কুলে।
যুদ্ধদিনের প্রসঙ্গ আসতেই মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফরের চোখ হয় ছলছল। কথার মাঝে দু-এক ফোঁটা জলও গড়িয়ে পড়ে। অতঃপর নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলতে থাকেন।
তাঁর ভাষায়–‘৬ জুলাই ১৯৭১। ফেনীর বটতলী বাজার হয়ে আমরা ভেতরে ঢুকি। তখন তিন থানা মিলে ছিল একটা এলএমজি। প্রত্যেকের কাছে রাশিয়ার সেভেন টু টু রাইফেল আর দুইটা করে গ্রেনেড। জয় বাংলা স্লোগান ছিল আমাদের একমাত্র প্রেরণা। ওই স্লোগানে রক্ত টলমল করত। নিজ এলাকায় আসাটা ছিল কঠিন। আশপাশের থানার সব মুক্তিযোদ্ধা একসঙ্গে আসি। লাইনে লাইনে আমরা। পাহাড়ি পথ। জোঁকে ধরেছে অনেককে। পাহাড় থেকে পড়ে জখমও হয় কয়েকজনের। পানির জন্য কলাগাছের ছালও চিবিয়ে খেয়েছি। এভাবে আসি ফটিকছড়ি। এক এক থানা পার হই আর ওই থানার একেকটা দল রয়ে যায়। সীতাকুণ্ড মিরেরসরাই, হাটহাজারীতে রেখে আসি দলগুলোকে। রাউজানে ছিলাম আমরা দশজন–আমি, সালেহ আহমেদ, সীতাকুণ্ডের হাবীব, ফটিকছড়ির দিদার, নোয়াখালীর নারায়ণ, ফরিদ প্রমুখ। আমাদের কমান্ড করতেন সালেহ আহমেদ। গেরিলা ছিলাম। নির্দেশ ছিল কিল করবা কিন্তু বেঁচে থাকতে হবে। যেখানে শক্রুকে মারবা, সেখান থেকে দুই মাইল দূরে লাশ ফেলে আসবা। সেভাবেই অপারেশন করি এক নম্বর সেক্টরের রাঙ্গুনিয়া, রাউজান ও ফটিকছড়ির বিভিন্ন এলাকায়।’

একাত্তরে কে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, সেটি যাচাই করাটাও ছিল কঠিন বিষয়। তেমনি একটি ঘটনার কথা জানান মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর। তিনি বলেন–‘ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন স্বপন চৌধুরী। তিনি বিএলএফের উত্তরের কমান্ডার হয়ে আসছেন। সূর্য নামে এক চাকমা আমাদের সঙ্গে ছিল। ও যে রাজাকার, তা বুঝতে পারিনি। মাঝেরপাড়া এলাকার চাকমা পাড়ায় পাহাড়ের ওপর আমরা অ্যাম্বুশ করে বসে আছি। স্বপন চৌধুরী এলেই আমরা রিসিভ করব। রাত তখন তিনটা। হঠাৎ ফায়ারের শব্দ। ওপর থেকে দেখলাম স্বপন চৌধুরীকে আর্মিরা ধরে টর্চার করে নিয়ে যাচ্ছে। রাজাকার সূর্য সব খবর দিয়ে আসে পাকিস্তানি সেনাদের।
আমরাও ক্ষিপ্ত হলাম। সে রাতেই এক্সপ্লোসিভ ফিট করে মানিকছড়ি ব্রিজের অর্ধেক ভেঙে দিই। ডেটনেটর ফিট করে দূরে গিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম। ওদের একটা গাড়ি এলেই বিস্ফোরণ ঘটাব। কিন্তু এক্সপ্লোসিভ কম থাকায় বিস্ফোরণে ব্রিজের অর্ধেকটা ভেঙে যায়। ওরা তখন তক্তা বিছিয়ে চলাচল করে। এর এক দিন পরেই আমরা রাণীরহাট ব্রিজটি উড়িয়ে দিই। ফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে রাঙামাটির যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
ওদের ঘুম আমরা হারাম করে দিয়েছিলাম। ডিসেম্বরে এফএফরা (ফ্রিডম ফাইটার) চলে আসলে আমরা আরও শক্তিশালী হই। তখন রাঙ্গুনিয়া থানা অপারেশন করি এবং সাত দিন আগেই রাঙ্গুনিয়া স্বাধীন করে মোগলেরহাটে ফ্ল্যাগ ওড়াই।’
স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের ভূমিকাও কম ছিল না। মোগলেরহাট এলাকায় মালতি দাস নামে অসম সাহসী এক বিধবা ছিলেন। তার পরিবারের সবাই পালিয়ে গিয়েছিল ইন্ডিয়াতে। ঘরে ছিল মাঝবয়সী আরও দুই নারী। তাদের একটা মাটির গুদাম ঘরে আশ্রয় নেয় আবু জাফরের দল। পরিচয় জানতেই চোখের দিকে তাকিয়ে ওই বিধবা বলেন–‘তোমরা এখানেই থাক। এমনিতেই তো মরছি আমার। তোমাদের সাথেই না হয় মরব।’ খাবার দিয়ে নানা খবর দিয়ে ওই বিধবা অনেক দিন মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছিলেন।’

স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভালো লাগা অনুভূতি জানতে চাই আমরা। উত্তরে এই যোদ্ধা বলেন–‘যেদিন যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি হয়েছে, সেদিন বুকের ভেতর থেকে যেন একটা কষ্টের পাথর নেমে গিয়েছে। এখন মরেও শান্তি পাব।’

খারাপ লাগে কখন?

যখন দুর্নীতি, অসততা আর স্বার্থপরতা দেখি। তখন খুব খারাপ লাগে। এর জন্য তো দেশ স্বাধীন করিনি। দেশের জন্য, মাটির জন্য, মায়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছি। স্বপ্ন ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে। কেউ খাবে কেউ খাবে না–এটা না হোক। সবার জন্য সুন্দর বাংলা, সবার জন্য অর্থনৈতিক মুক্তি, সবার অধিকার বাস্তবায়ন হবে। তবে শেখ হাসিনা থাকলে আমরা একদিন অবশ্যই সে দেশ পাব।
পরবর্তী প্রজন্মের হাত ধরেই দেশটা একদিন সোনার বাংলা হবে–এমনটাই বিশ্বাস বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর চৌধুরীর। চোখে মুখে আশার আলো ছড়িয়ে তাদের উদ্দেশে তিনি শুধু বললেন–‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর অর্জনগুলোকে তোমরা ধরে রেখ। ভালোভাবে পড়ালেখা করো। যদি অসুন্দর মানুষ হও তবে তো সুন্দরকে চিনবে না। তাই নিজেকে সৎ ও সুন্দর করে গড়ে তোল। তোমরা আদর্শবান হলেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। আমরা তখন থাকব না। কিন্তু আমাদের আত্মা তোমাদের জন্য দোয়া করবে।’

লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে সংবাদ প্রকাশে, প্রকাশকাল: ১৫ অক্টোবর ২০২১

© 2021, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button