কলাম

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আত্মিক ও বিশ্বাসের’-কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন

একাত্তরের গল্পগাথা’র মোড়ক উন্মোচন

বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোনো বস্তুগত বিষয় নয়, এটা আত্মিক ও বিশ্বাসের বিষয়। একাত্তরে যাঁরা যুদ্ধ করেছিলেন তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে কিছু পাওয়ার জন্য নয়, বরং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করেছেন। তাঁদের স্লোগান ছিল একটাই—‘জয় বাংলা’।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স প্রকাশিত গবেষক সালেক খোকনের ‘একাত্তরের গল্পগাথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ইমদাদুল হক মিলন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান আলোচক ছিলেন।

‘একাত্তরের গল্পগাথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনসহ অতিথিরা। ২০ জানুয়ারি ২০২৩ রাজধানীর ধানমণ্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে। ছবি : মনিরুল আলম

তিনি আরো বলেন, ‘আজ আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে নানা কথা শুনি, দেশ-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র চলছে বাংলাদেশ নিয়ে, এসব অপপ্রচার-ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সোনার বাংলা গড়তে হবে। তাহলেই আমরা দেখতে পাব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।’ এ সময় তিনি আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠের আহ্বান জানান এবং অভিভাবকদেরও তাঁদের সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানানোর তাগিদ দেন।

বক্তব্য রাখছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও কবি খালেদ হোসাইন, ছবি: মনিরুল আলম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও কবি খালেদ হোসাইন বলেন, ‘একাত্তরে যাঁরা নিজেদের জীবন, পরিবার বিপন্ন করে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন, তাঁদের আমাদের মাথায় করে রাখতে হবে। তাঁরা যে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন সেই দেশ গঠনে আমাদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধকালে এত ত্যাগ-তিতিক্ষার কোনো মূল্য থাকবে না।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। বইটিতে যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে তাঁরাও এই আয়োজনে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে বক্তব্য দেন ১৯৭১ সালে বিশ্ব বিবেক জাগরণ পদযাত্রার ডেপুটি লিডার-২ কামরুল হাসান ও ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেওয়া কর্নেল (অব.) তৌফিকুর রহমান।

তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে; কিন্তু এখনো মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ গবেষণাগ্রন্থ রচিত হয়নি। এই সময়ের মধ্যে আমার অনেক সহযোদ্ধা চিরতরে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন এবং যাঁরা আছেন তাঁরা জীবনের শেষ প্রান্তে উপনীত। এ অবস্থায় এখনই মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত ঘটনাবলি লিপিবদ্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে।’

গবেষক সালেক খোকন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ২০০ মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।’

ছবি: মনিরুল আলম

কালের কণ্ঠের সংবাদ, প্রকাশকাল: ২১ জানুয়ারি, ২০২৩ 

© 2023, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button