কলাম

মুজিবনগরে শপথ ও গার্ড অব অনার ফিরে দেখা

বড় বড় আমগাছ। সংখ্যায় দুই হাজারের মতো। অধিকাংশই শতবর্ষী। প্রচণ্ড রোদ। তবু চারপাশে শীতল অনুভূতি। দিনময় এখানে চলে পাখিদের কোলাহল। ছায়াঘেরা পাখিডাকা আম্রকানন এটি। খরতাপও এখানে করে কুর্নিশ। বলছি মুজিবনগরের কথা। আগে নাম ছিল বৈদ্যনাথতলা। বৈদ্যনাথতলা থেকে পলাশীর দূরত্ব মাত্র কুড়ি মাইল। ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে অস্তমিত হয়েছিল বাংলার স্বাধীনতার শেষ সূর্যটি। কিন্তু মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননের ইতিহাসটি গৌরবের।

১৭ এপ্রিল ১৯৭১। এখানেই স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের সূর্য উদিত হয়। দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও হাজারো জনতার সামনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা শপথ নেন। সেই থেকে ইতিহাসের হাত ধরে বৈদ্যনাথতলা হয়ে যায় মুজিবনগর।

কিন্তু এই সরকার গঠনের আগের প্রেক্ষাপটটিও একটু জেনে নেওয়া প্রয়োজন। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বাঙালি নিধন ক্রমশই বাড়ছে। সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলোতে বিপন্ন দেশত্যাগীদের ঢলও বাড়তে থাকে। দেশের নানা অংশে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ ও ছাত্রজনতা বিচ্ছিন্ন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু পাকিস্তানি সাঁজোয়া বাহিনীর কাছে তারা টিকতে পারে না।

এদিকে ভারত সীমান্তের সব অংশে আশ্রয়লাভকারী যুব-তারুণরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালানোর জন্যও তখন একটি আনুষ্ঠানিক কর্তৃপক্ষ জরুরি হয়ে ওঠে। ফলে যত দ্রুত সম্ভব একটি সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তা বোধ করতে থাকেন সকলে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার বিভিন্ন অংশে আওয়ামী লীগ নেতারা অনেকেই বৈঠকে বসেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে কার নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হবে, কারা এর উদ্যোগ নেবেন— এসব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত হাল ধরেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামান, জহুর হোসেন চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, আব্দুস সামাদ আজাদ প্রমুখ। সিদ্ধান্ত হয় গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার গঠনের।

১০ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে বাংলাদেশ সরকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রদান করে। যা ‘বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান’ বলে ধরে নেওয়া হয়। ওইদিন সত্তরের নির্বাচনে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা এই সরকার গঠন ও এই সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেন। এই সরকারই ‘মুজিবনগর সরকার’ বা ‘প্রবাসী সরকার’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

তারা পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেন। আরও সিদ্ধান্ত হয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম হবেন উপরাষ্ট্রপতি, যিনি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন আর তাজউদ্দীন আহমদ যুদ্ধকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন।

ওইদিন গভীর রাতে (১১ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গের কোনও এক অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদের রেকর্ড করা একটি ভাষণ গোপন বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রচারিত হয়। ওই বেতার ভাষণের মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের প্রথম সরকার বিশ্ববাসীর সামনে আত্মপ্রকাশ করে।

মন্ত্রিসভার সদস্য হন: এম মনসুর আলী (অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প), এএইচএম কামারুজ্জামান (স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুণর্বাসন ও কৃষি) এবং খন্দকার মোশতাক আহমদ (পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ মন্ত্রী)। একইসঙ্গে জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার ও মেজর জেনারেল আবদুর রব চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। এইচটি ইমাম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনে যোগদান করেন।

বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল ১৪ এপ্রিল ১৯৭১, চুয়াডাঙ্গায়। কিন্তু সেই গোপন সিদ্ধান্তটি সংবাদপত্রে ফাঁস হয়ে যায়। ফলে পাকিস্তানি সেনারা প্রবল বোমাবর্ষণ করে ওই স্থানে। আর এতে ভেস্তে যায় সেই পরিকল্পনা। এমন তথ্য মেলে তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরিতে।

কয়েক বছর আগের কথা। মুজিবনগরের আম্রকাননে যখন পা রাখি সূর্যটা তখন হেলে পড়েছে। হালকা আলো এসে পড়েছে ধবধবে সাদা ভাস্কর্যগুলোতে। ভাস্কর্য ও  ম্যুরালচিত্রের মাধ্যমে মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোকে। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, গার্ড অব অনার, মন্ত্রিপরিষদ, সেক্টর কমান্ডারস, মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশন এখানে প্রায় জীবন্ত। আম্রকানন আর স্মৃতিসৌধটিও দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।

সেদিন মুজিবনগরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। গার্ড অব অনার প্রদানকারী বারোজনের মধ্যে বেঁচে আছেন মাত্র তিনজন আনসার সদস্য। এক যুবক জানালেন তথ্যটি। মুঠোফোন নম্বর দিয়ে সহায়তাও করলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা হতেই একে একে উপস্থিত হন কালের সাক্ষী তিন আনসার সদস্য— মো. সিরাজ উদ্দীন, মো. আজিমুদ্দিন শেখ ও মো. লিয়াকত আলী (বর্তমানে প্রয়াত)। তাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে আসে ওই দিনের ইতিহাসটি।

 ‘‘২৬ মার্চের পরেই আমরা বৈদ্যনাথতলা ইপিআর ক্যাম্পটি দখলে নিই। ক্যাম্পে ওড়ানো পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে আগুন ধরিয়ে দিই। এর পর থেকেই ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকি আমরা, ১২ জন আনসার। সংগ্রাম কমিটির লোকেরা আমাদের চাল-ডাল সংগ্রহ করে দিতেন। আমরা নিজেরাই তা রান্না করে খেতাম।’’— এভাবেই কথা বলা শুরু করেন আজিমুদ্দিন। তিনি ছিলেন ভবরপাড়া গ্রামের সে সময়কার আনসার কমান্ডার।

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কথা উঠতেই তিনি বলেন, ‘‘১৬ এপ্রিল আসর নামাজের একটু পরেই ক্যাম্পে আসেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, কামরুজ্জামান, এম মনসুর আলী, ওসমানী, তৌফিক-ই-ইলাহীসহ (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা) অনেকেই। তৌফিক-ই-ইলাহী ছিলেন মেহেরপুরের তৎকালীন এসডিও। তিনি ছাড়া আমাদের কাছে বাকিরা ছিলেন অপরিচিত। ক্যাম্পের পেছনের গেট দিয়ে তারা চলে যান আম্রকাননে। সেখানে অনুষ্ঠানের জায়গা নির্ধারণ করে আবার ফিরে আসেন ক্যাম্পে। তৌফিক-ই-ইলাহী কিছু নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আগামীকাল এখানে বেশ কিছু মেহমান আসবেন। আপনারা আজ একটু সজাগ থাকবেন। আর কাল সকালে রেডি থাকবেন।’’

১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে মঞ্চ তৈরির দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় সংগ্রাম কমিটির সদস্য মোমিন, জজ মাস্টার, আইয়ুব ডাক্তার, সৈয়দ মাস্টার, রফিক মাস্টার, রুস্তম উকিল, জামাত মাস্টার, সুশীল কুমার বিশ্বাস প্রমুখ। মাটির ওপরে তক্তা বিছিয়ে স্টেইজ এবং কাপড়, দড়ি, বাঁশ, দেবদারুর পাতা দিয়ে সাজানো হয় অনুষ্ঠানস্থল। দুটি বাঁশ পুঁতে দেবদারুর পাতায় তৈরি করা হয় গেট। চেয়ার, মাইক আর টেবিল আসে ভারত থেকে। শেষরাতের দিকে ইপিআর ক্যাম্প থেকে আনা হয় চৌকি।

ভোররাতের কথা জানালেন সিরাজ উদ্দীন—‘‘আমরা তখনও জানি না, এখানে কী হবে। শেষরাতে শুনি, চারপাশে গাড়ির শব্দ। আমরা ক্যাম্প থেকে কিছু ঠাহর করতে পারি না। ভোরের দিকে দেখি, শত শত ভারতীয় বিএসএফ। সাদা পোশাকে তারা ঘিরে রেখেছে গোটা এলাকা।

অনুষ্ঠান শুরু হয় বেলা ১০ বা ১১টায়। জাতীয় নেতারা মঞ্চে উঠলে কোরআন তেলাওয়াত আর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। আসাদুল হক, শাহাবুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, পিন্টু বিশ্বাস, আইয়ুব প্রমুখ জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ দেন। কোরআন তেলাওয়াত করেন সতের বছরের কিশোর মো.বাকের আলী। দলের হুইপ এমএনএ আবদুল মান্নান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। চিফ হুইপ অধ্যাপক ইউসুফ আলী স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। শপথ করান সৈয়দ নজরুল ইসলাম। শপথের পরই ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ভাষণ দেন। এরপরই শুরু হয় গার্ড অব অনার পর্বটি।’’

সকালের দিকেই আনসার সদস্যরা অস্ত্রসহ আসেন অনুষ্ঠানস্থলে। তাদের বলা ছিল গার্ড অব অনারের প্রস্তুতি নিতে। সকাল নয়টায় আম্রকাননে অতিথিরা আসতে থাকেন। আশপাশের হাজার হাজার মানুষও জড়ো হয়। উপস্থিত হন দেশি-বিদেশি শতাধিক সাংবাদিক।

আজিমুদ্দিন শেখের ভাষায়, ‘‘প্রথমে আমাদের কমান্ডে ছিলেন আনসার ইয়াদ আলী। পেছনের লাইনে ছিলাম আমরা ১১ জন। ইয়াদ আলীকে লাইনে পাঠিয়ে কমান্ড করলেন মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ। তিনি ছিলেন মাগুরা মহকুমার পুলিশ কর্মকর্তা (এসডিপিও)। পেছনে আমরা ১২ জন গার্ড অব অনার প্রদান ও সশস্ত্র সালাম দিই। অন্য আনসার সদস্যরা হলেন— হামিদুল হক, ফকির মোহাম্মদ, নজরুল ইসলাম, মফিজ উদ্দিন, অস্থির মল্লিক, মহিম শেখ, কিসমত আলী, সাহেব আলী, এবং ইয়াদ আলী।’’

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করে তিনি বললেন, ‘‘সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনসহ মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন। সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয় আতাউল গণি ওসমানীর নাম। সেদিনই বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও হাজার দশেক লোক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তারা স্লোগান তোলে— জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর ইত্যাদি।’’

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ভাষণে তাজউদ্দীন আহমদ তার ভাষণে বলেছিলেন—‘‘সাড়ে সাত কোটি বাঙালি অজেয় মনোবল ও সাহসের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে এবং প্রতিদিন হাজার হাজার বাঙালি সন্তান রক্ত দিয়ে এই নতুন শিশুরাষ্ট্রকে লালিত-পালিত করছেন। স্বাধীন বাংলাদেশ আজ এক বাস্তব সত্য।’’

মূলত এই শপথ অনুষ্ঠানের পরই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নাম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

পরবর্তীতে ‘মুজিবনগর সরকার’-কে ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ভাগ করা হয়। এ ছাড়া, কয়েকটি বিভাগ মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীন থাকে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুদ্ধরত অঞ্চলকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটিতে একজন করে সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ দেয়। তবে ১০ নম্বর বা নৌ সেক্টরে কোনো সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না। মূলত এই সরকারের সফল নেতৃত্বে নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র আত্মপ্রকাশ করে।

শুধু তাই নয়, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের এই প্রথম সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন।

নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে সীমিত সামর্থ্য নিয়ে মুজিবনগর সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও প্রশাসন পরিচালনা এবং অসম স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে তাই মুজিবনগর সরকারের নামটিও ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা, ওই সরকারের বিচক্ষণতা ও কৌশল সম্পর্কে বর্তমান সময়ের তরুণরা তো বটেই নতুন রাজনীতিকরা কতটা জানেন তা নিয়ে সংশয় আছে। পাশাপাশি ৭২-এর সংবিধান থেকে সরে আসায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধর্মনিরপেক্ষতার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা অনেকটাই দুরূহ হয়ে গেছে।

জাতির দুঃসময়ে হাল ধরেছিলেন নির্মোহ ও নিঃস্বার্থ সাধক সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদের মতো আওয়ামী লীগ নেতারা। কিন্তু তাদের সঠিক মূল্যায়ন জাতীয় পর্যায়ে আজও ঘটেনি বলে মনে করেন অনেকেই। তাই সেদিন যারা ইতিহাস রচনা করেছিলেন তাদের ইতিহাসও ছড়িয়ে দিতে হবে প্রজন্মের মাঝে। তাহলেই সত্যিকারভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হবে প্রজন্ম।

পাশাপাশি বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ হিসেবে এগিয়ে নিতে এবং রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত মুজিবনগর সরকারের ওইসময়ের সাহসী নেতাদের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়াও প্রয়োজন বলে মনে করি।

লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে সকাল সন্ধ্যা ডটকমে, প্রকাশকাল: ১৭ এপ্রিল ২০২৪

© 2024, https:.

এই ওয়েবসাইটটি কপিরাইট আইনে নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং: 14864-copr । সাইটটিতে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো তথ্য, সংবাদ, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Show More

Salek Khokon

সালেক খোকনের জন্ম ঢাকায়। পৈতৃক ভিটে ঢাকার বাড্ডা থানাধীন বড় বেরাইদে। কিন্তু তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকার কাফরুলে। ঢাকা শহরেই বেড়ে ওঠা, শিক্ষা ও কর্মজীবন। ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর। ছোটবেলা থেকেই ঝোঁক সংস্কৃতির প্রতি। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও থিয়েটারের সঙ্গেও। তাঁর রচিত ‘যুদ্ধদিনের গদ্য ও প্রামাণ্য’ গ্রন্থটি ২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসেবে ‘কালি ও কলম’পুরস্কার লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী ও ভ্রমণবিষয়ক লেখায় আগ্রহ বেশি। নিয়মিত লিখছেন দেশের প্রথম সারির দৈনিক, সাপ্তাহিক, ব্লগ এবং অনলাইন পত্রিকায়। লেখার পাশাপাশি আলোকচিত্রে নানা ঘটনা তুলে আনতে ‘পাঠশালা’ ও ‘কাউন্টার ফটো’ থেকে সমাপ্ত করেছেন ফটোগ্রাফির বিশেষ কোর্স। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধ, আদিবাসী এবং দেশের কৃষ্টি নিয়ে ভিন্ন ধরনের তথ্য ও গবেষণামূলক কাজ করার। সহধর্মিণী তানিয়া আক্তার মিমি এবং দুই মেয়ে পৃথা প্রণোদনা ও আদিবা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back to top button