বঙ্গবন্ধু আর জয় বাংলা যিনি মানেন না তিনি বাঙালি নন
“নুরুল আবেদিন তহন ক্লাসের ফার্স্ট বয়। এহন সে নাসার বিজ্ঞানী। সেকেন্ড বয় প্রাণকৃষ্ণ। শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজের প্রফেসর সে। আমি মোটামুটি মানের ছাত্র ছিলাম। তিন মাস পইড়া পাশ করতাম। খালি নেতাগিরি কইরা বেড়াইতাম। ছাত্রলীগের কমনরুম সম্পাদক ছিলাম। জেনারেল সেক্রেটারি ছিল নুর ইসলাম। হাডুডু খেলতাম ভালো। গায়ের ওপর দুই-চারজন পড়লেও টাইন্না নিয়া আইতাম। নড়িয়া হাই স্কুলে আমগো ১৭ জনের একটা গ্রুপ ছিল। বর্ষাকালে সবাই স্কুলের বোডিংয়ে গিয়া থাকতাম। চারদিকে তহন পানিতে থই থই। কীর্তিনাশা নদীতে হইত নৌকাবাইচ। দলবেঁধে আমরা দেখতে যাইতাম। চাঁদনি রাতে নৌকা ভাসাইতাম নদীর বুকে। তহন আনন্দের সীমা ছিল না।’’
“ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক ছিল আত্মীক। আমগো প্রধান শিক্ষক ছিলেন আনোয়ার হোসেন মুন্সি। ক্লাস নাইনে রেজিস্ট্রেশন চলছে। আমি জন্মতারিখ দিলাম আসলটা। উনি আইসা কান টাইনা ধমক দিয়া কইলেন, ‘ওই ব্যাটা, তুই বেশি বুঝস।’ জন্ম তারিখে দুই বছর কমাইয়া লিখলেন। মিথ্যা হলেও ওইটাই তহন নিয়ম ছিল। তার সুফল পাইছি চাকরি জীবনে।’’
“আমগো ওইখানে আওয়ামী লীগের নেতা তহন ডাক্তার আবুল কাশেম, কর্নেল শওকত আলী প্রমুখ। শেখ মুজিবের ভক্ত ছিলাম। একবার তিনি মিটিং করতে আসেন সুরেশ্বর পীরের দরগা শরিফে। ওইদিনই নেতারে প্রথম দেহি। হাত মিলানোর পর কইলেন, ‘তোর নাম কী? লেখাপড়া ঠিকমতো করিস তো?’ বঙ্গবন্ধুরে বাতাস করার দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর। সবাইরে নিয়া তিনি খাবার খাইলেন। অতঃপর আমার দিকে তাকাইয়া কইলেন, ‘রফিক, তোরাও খেয়ে নে।’’’
“এত অল্প সময়ে বঙ্গবন্ধু আমার নাম মনে রেখেছেন! ভাবতেই বুকটা ভইরা গেল। ওইদিন থেকেই শেখ মুজিবের নামটা আমার মনে গাঁইথা গেছিল।”
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম দেখার স্মৃতিচারণ শুনছিলাম যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের জবানিতে।
রফিকুল ইসলামের বাবার নাম রবিউল্লাহ জমারদার আর মা চেহারুন বিবি। বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সাহেবের চর গ্রামে। চার ভাই ও তিন বোনের সংসারে রফিকুল দ্বিতীয়।
বাবা ব্যবসা করলেও তিনি চাইতেন ছেলে ভালোভাবে লেখাপড়া শিখুক। রফিকুলের লেখাপড়ায় হাতেখড়ি মুলফতগঞ্জ প্রাইমারি স্কুলে। পঞ্চম শ্রেণি পাশের পর তিনি ভর্তি হন নড়িয়া হাই স্কুলে। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী।
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য প্রসঙ্গে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন:
“প্রায় ১২শ মাইল দূর থেকে এসে পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের শাসন করত। আমার দেশের সম্পদ চলে যেত ওদের ওখানে। এখানে কাগজ তৈরি হলেও বেশি দামে কিনতে হত। পূর্ব পাকিস্তানের ‘সোনালী আশ’ পাট বিক্রির টাকায় উন্নত হত পশ্চিম পাকিস্তান। আমগো চাকরি মিলত পিয়ন-ক্যারানির। ওরা বড় বড় পোস্ট দখল করে রাখত। এসব কথা বঙ্গবন্ধু ভাষণে বলতেন। আমরাও তহন গ্রামে গ্রামে গিয়া মানুষরে বুঝাইতাম।”
৭ মার্চ ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেবেন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে। এ খবর পেয়ে শরীয়তপুর থেকে হাতে বাঁশের লাঠিসহ রফিকুল চলে আসেন ঢাকায়। সঙ্গে ছিলেন জলিল খানসহ অন্যরা। খুব কাছ থেকে শোনেন বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ওই ভাষণ।
তাঁর ভাষায়–
“আমরা তো লেংটিপড়া বাঙালি। তহন লাঠিই ছিল ভরসা। বাঙালির অস্ত্র। তাই বঙ্গবন্ধুর ডাকে হাজির হইছিলাম। বঙ্গবন্ধু উঠলেন মঞ্চে। মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকে। তিনি বললেন, ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে… এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম…। তাঁর ওই ভাষণ তো আধ্যাত্মিক ভাষণ। আজও বাঙালির মনকে নাড়া দিয়ে যায়।”
২৫ মার্চ ১৯৭১। ঢাকায় চলে গণহত্যা। লোকমুখে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো শরীয়তপুরেও। রফিকুলরা তখন পাকিস্তানি ও বিহারিদের প্রতিরোধে লাঠি হাতে জড়ো হয় ওয়াবদা ঘাটে। ইপিআর থেকে পালিয়ে আসা আব্দুল হক রফিকুলদের লাঠি হাতে ট্রেনিং করান পদ্মার চরে। ওই ট্রেনিং মনোবল বাড়ালেও তেমন কাজে আসেনি।
আহত হওয়ার বর্ণনা দিচ্ছেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম:
অনেকেই তো মুক্তিযুদ্ধে যায়নি, আপনি কেন গেলেন?
মুচকি হেসে রফিকুল বলেন:
“আশপাশে তহন পাকিস্তানি সেনারা অত্যাচার চালাচ্ছে। তাদের সহযোগিতা করে শান্তি কমিটির লোকেরা। নিজের দেশই অন্যের দখলে। এটা দেখে ঠিক থাকতে পারি না। জীবনের মায়া করি নাই। মা, মাটি ও দেশকে মুক্ত করতেই যুদ্ধে গেছি।”
ট্রেনিং নিলেন কোথায়?
“মে মাস তহনো শেষ হয়নি। জলিল খাঁ, আলিম ব্যাপারী, আলী আহমেদ, আহসান উল্লাহ, মান্নানসহ ১৬ জন একত্রিত হই। মা প্রথমে ছাড়তে চাইলেন না। সংসারে বড় ছেলে আমি। অনেক বোঝানোর পর চোখের জলে শুধু মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন মা। হাতে গুঁজে দেন ২৫ টাকা। একরাতে মুলফতগঞ্জ বাজার ঘাট থেকে নৌকা ছাড়ে। পরে দাউদকান্দী পাড় হয়ে কসবা কোনাবন হয়ে চলে যাই আগরতলায়। সেখান থেকে আমাদের পাঠানো হয় দুই নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার মেলাঘরে।”
রফিকুল বলেন:
“ওখানে শিক্ষিত ছেলেদের বাছাই করে প্রথমে নেভাল ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হয় ত্রিপুরার উদয়পুরে। ২১ দিনের ট্রেনিং চলে সেখানে। পানির মধ্যে দিয়ে লঞ্চ বা জাহাজে কীভাবে মাইন লাগানো যায় সে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর ২৮ দিনের গেরিলা হায়ার ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হয় আসামের ওমপি নগরে। আলফা, ব্রাভো ও ডেলটা– এই তিনটি কোম্পানি ছিল। আমি ছিলাম আলফা কোম্পানিতে। ট্রেনিং ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন ভারতীয় ক্যাপ্টেন চৌহান। মাইন বিস্ফোরণে ছিলাম বিশেষ পারদর্শী। এ ছাড়া দশ রাউন্ড গুলি দিলে ৯ রাউন্ডেই আমি টার্গেট শেষ করে ফেলতাম। আমারে তাই ওস্তাদরা ডাকত ‘বিচ্ছু’ বলে।”
ট্রেনিং শেষে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুলদের অস্ত্র দেওয়া হয় মেলাঘর থেকেই। অন্য যোদ্ধারা নিজ নিজ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা দলে যোগ দিলেও রফিকুল থেকে যান ডিফেন্স পার্টিতে। যুদ্ধ করেন দুই নম্বর সেক্টরের দেবিপুর, চক চন্দ্রপুর, চারঘাট, আখাউড়া রেলস্টেশন, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, কোনাবন, কসবা ও সালদা এলাকায়। রফিকুলদের ৩৬ জনের গ্রুপটির কমান্ড করতেন নওয়াব।
এক সম্মুখযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল মারাত্মকভাবে গুলিবিদ্ধ হন। পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে তাঁর ডান হাতের বুড়ো আঙুলের হাড় গুঁড়ো হয়ে যায়। ফলে সারা জীবনের জন্য সেটি কর্মক্ষমতা হারায়। ওই ক্ষতটির দিকে আজও দৃষ্টি পড়লে আনমনা হয়ে যান মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল।
কী ঘটেছিল রক্তাক্ত ওই দিনটিতে?
এমন প্রশ্নে রফিকুলের মনে কি ঝড় ওঠে? খানিক নীরব থেকে তিনি বলেন:
“২১ নভেম্বর ১৯৭১। ভোর রাত। আমরা ৪০ জনের মতো। সামনে অ্যাডভান্স হচ্ছি। বিভিন্ন সাইডে অন্যান্য গ্রুপের যোদ্ধারা। পেছনে কাভারিং ও আর্টিলারি সার্পোট দিচ্ছে ভারতীয় সেনারা। মুরাদনগর এলাকায় পৌঁছাতেই শুরু হয় তুমুল গোলাগুলি। আর্টিলারির শব্দে মাটি কাঁপছে। এক একটা আর্টিলারি মাটিতে পড়তেই পুকুর হয়ে যায়। আমার পজিশন একটু নিচু জায়গায়। অস্ত্র ছিল পছন্দের– এসএলআর। প্রচণ্ড গোলাগুলি করছি। কে কোন দিকে খেয়াল করার উপায় নাই। মনে হচ্ছিল যেন আগুনের বৃষ্টি ছুটছে! হঠাৎ চু করে ব্রাশের গুলি এসে লাগে আমার ডান হাতে। কিন্তু আমি তহনও ঠাওর করতে পারি না। টিগার টিপছি। কিন্তু কই গুলি তো বের হয় না?’’
“চাইয়া দেহি ডান হাতের আঙুলগুলো রক্তে ভেজা। কলার ছোকলার মতো চামড়ায় ঝুলে আছে বুড়ো আঙুলটি। স্পর্শ করতেই আঙুলের হাড় গুঁড়ো হয়ে পাউডারের মতো বেরিয়ে আসে। তিরতির করে রক্ত পড়ে। কিছুক্ষণ যেতেই চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসে। প্রথমে ভারতে বাংলাদেশ হাসপাতালে। পরে বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসা চলে গোহাটিতে।’’
“গুলি লাগার চেয়েও কষ্টের ছিল চিকিৎসার সময়টা। ব্যান্ডেজ করা ছিল গোটা হাত। আঙুল পচে পুঁজ বেরুত। সেপটিক হয়ে গিয়েছিল। হাড়-মাংসের পচা গন্ধে নিজেই ঠিক থাকতে পারতাম না। হাত কেটে ফেলতে চাইতাম। কষ্টে তখন শুধু কান্নাকাটি করতাম। ডাক্তারা ভেবেছিল হাতটি কবজি থেকে কেটে ফেলতে হবে। ঘা শুকিয়ে যাওয়ায় তা থেকে রক্ষা পাই। কিন্তু সারাজীবনের জন্য আমার বুড়ো আঙুলটা অকেজো হয়ে যায়।”
স্বাধীনতার পর সবাই বাড়ি ফিরলেও রফিকুল ফেরেন না। এক সহযোদ্ধা তাঁর রক্তমাখা শার্টটি পাঠিয়ে দেয় বাড়িতে। তা দেখে পরিবার প্রায় নিশ্চিত হয় রফিকুল বেঁচে নেই! দোয়াদরূদ ও চল্লিশা পড়াও শেষ হয়ে যায়। পরে ভারত থেকে চিঠি পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আশ্বস্ত হন।
রফিকুল ইসলাম যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পান ১৯৭৩ সাল থেকে। পরে তিনি এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। অতঃপর ১৯৭৮ সালে কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে গুলিস্থান হলের ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি কল্যাণ কর্মকর্তা হিসেবে অবসরে যান।
যে দেশের জন্য রক্ত দিয়েছেন, স্বপ্নের সে দেশ কি পেয়েছেন?
এ প্রশ্নের উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল বলেন:
“দেশ পেয়েছি। কিন্তু স্বাধীন এ দেশে তো বঙ্গবন্ধুকেই বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি। এটাই বড় কষ্ট। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে হয়ত এ দেশের স্বাধীনতা আমরা কল্পনাও করতে পারতাম না। যে মানুষটি এই দেশের জন্য সারাটা জীবন দিয়ে দিলেন, তাঁকেই আমরা হত্যা করলাম সপরিবারে। আমরা শুধু বীরের জাতি নই, মীর জাফরেরও জাতি।”
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে এই যোদ্ধা অকপটে তুলে ধরেন নিজের মতামত, “বঙ্গবন্ধুকে শুধু সপরিবারে হত্যাই নয়, তাঁর হত্যার বিচার চাইতে না পারার অধ্যাদেশও জারি করেছিল জিয়াউর রহমান। ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ জারির সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল তাদের কেন বিচার করা হল না?”
জাতির জনকের মূল্যায়ন এখনও পুরোপুরি হয়নি বলে মনে করেন মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল। “শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনলেই চলবে না। বঙ্গবন্ধুর জীবনী বিভিন্ন স্তরে পাঠ্য হওয়া উচিত। তাঁকে না জানলে বাংলাদেশের ইতিহাস জানা হবে না। দেশের জন্য আত্মত্যাগ যে কী জিনিস– সেটা তাঁর জীবন পাঠের মধ্য দিয়েই জানা যাবে। ‘বঙ্গবন্ধু’ আর ‘জয় বাংলা’ যিনি মানেন না তিনি তো বাঙালি নন”– রায় দেন রফিকুল।
৪৪ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাড়ে। কেন?
এমন প্রশ্নের উত্তরে এই বীর যোদ্ধা বলেন–
“এটা একটা রাজনৈতিক খেলা। একেক সময় একেক সরকার আইসা তাদের লোকগুলো ঢুকাইছে। একজন গরু চুরি করতে গিয়া পা কাটা পড়ছে এমন লোকও মুক্তিযোদ্ধা হইছে, ভাতাও পায়। ওদের কথা শুনলে মনে হবে ওরাই বড় মুক্তিযোদ্ধা। অনেকেই তো গল্প মুখস্থ করেই মুক্তিযোদ্ধা হইছে। স্বার্থের কারণে মুক্তিযোদ্ধারাও আজ তাদের সম্মানটা বজায় রাখতে পারছে না। এটা দুঃখজনক। সচিব পর্যায়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কিন্তু শাস্তি হয়নি। এটাও কিন্তু আমরা আশা করি নাই।”
মুক্তিযোদ্ধার এ দেশে ‘জঙ্গি-ফঙ্গি’ ঠাঁই পাবে না– এমনটাই বিশ্বাস মুক্তিযোদ্ধা রফিকুলের। “পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছে এই দেশের ছেলেরা। আর জঙ্গিরা পালাবে কোথায়? ওরা নামে মাত্র ইসলাম, কোথায় পাইল ওরা মানুষ হত্যা করার কথা! ওরা তো অসুস্থ, জংলি। তবে সরকারের ভেতরে কারা ওদের সহযোগী সেটিও বের করা জরুরি”, বলেন রফিকুল।
দেশ কেমন চলছে?
“ভালো তো অবশ্যই। শেখের বেটি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) পদ্মা সেতু করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে উন্নতি যে হচ্ছে; সবাই টের পাচ্ছে। তবে নেতাকর্মীদের দুর্নীতির দিকেও নজর দিতে হবে। এহন তো হাইব্রিড নেতা বেশি। আখের গোছাতে ব্যস্ত অধিকাংশ মানুষ। মানুষের চিন্তার জগতটাও বদলাতে হবে। প্রত্যেকেই যদি কাজের ক্ষেত্রে সৎ থাকে তবে তো দেশের চেহারাই পাল্টে যাবে।”
১৬ই ডিসেম্বর ও ২৬শে মার্চ এলেই চারপাশে ওড়ে লাল-সবুজের পতাকা। মুক্তিযোদ্ধা রফিকুলের তখন মন ভরে যায়।
খারাপ লাগে কখন?
“যখন দেখি রাজাকার মতিউর রহমানের পিএস হন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব। যার কারণে চট্টগ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধা আত্মহত্যাও করেছে। যখন দেখি মধ্যরাতে টিভিতে বইসা অনেকেই চুকা (টক) কথা কয়। কিন্তু আসল কথায় হাতও দেয় না। বরং মানুষের মধ্যে আরও বেশি বিভ্রান্তি তৈরি করে। তখন খুব খারাপ লাগে।”
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মনে করেন, সঠিক ও যোগ্য প্রজন্ম তৈরির দায়িত্ব সবার। সুশিক্ষিত ও দেশপ্রেম থাকলেই পরবর্তী প্রজন্ম এই দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। একদিন তা অবশ্যই হবে– এমন বিশ্বাস মুক্তিযোদ্ধা রফিকুলের।
লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে বিডিনিউজ২৪.কমে , প্রকাশকাল: ১৯ আগষ্ট ২০১৬
© 2016 – 2018, https:.